আমি এই মাস্কটি কিনেছিলাম কারন আমার স্কিন কিছুটা তৈলাক্ত এবং নাকের দুই পাশের লোমকূপের ছিদ্র গুলো বেশ বড় যা কিনা খুব সহজেই দৃশ্যমান হতো।আমি পরীক্ষা করতে চেয়েছিলাম যে এটি কি আসলেই কাচা ডিমের সাদা অংশের মতো লোমকূপের ছিদ্র কমিয়ে তুলতে সক্ষম হয় কিনা কারন কাচা ডিম মুখে ব্যবহার আমার কাছে খুবই বিরক্তিকর লাগে বিশেষ করে গন্ধটা ।
আসুন আগে জেনে নেই এর প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ‘স্কিনফুড’ এটি সম্পর্কে কি প্রতিশ্রুতি দেয় –
– এতে বিদ্যমান অ্যালবামিন,যা ডিমের সাদা অংশ হিসাবে পরিচিত এটি ত্বকের জন্য উপকারী।
– লোমকূপের গভীরে দ্রুত প্রবেশের মাধ্যমে জমে থাকা তেল ও ময়লা অপসারন করে।
– এটি ব্ল্যাকহেড/হোয়াইটহেড সহ মৃতকোষ দূর করে।
– তৈলাক্ত ত্বকের অত্যধিক সেবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে।
– এটি বেঁড়ে যাওয়া লোমকূপকে স্বাভাবিক করে।
– মৃত কোষ ঝরিয়ে নতুন কোষের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।
– এটি একটি শক্তিশালী ব্রণ প্রতিরোধি উপাদান সম্পন্ন।
– এর ব্যবহার কোলাজেন কোষের বৃদ্ধি উদ্দীপিত করে, ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা এবং নমনীয়তা বাড়ায় ।
– এটি ত্বকে বিদ্যমান ব্যাকটেরিয়ার আবাস ধ্বংস করে ।
এবার আসি মাস্ক টেক্সচার ও প্যাকেজিং এ –
এটি কিছুটা ঘন মাখনের মতো টেক্সচার সম্পন্ন । দেখে মনে হবে যেন ডিম সাদা সাদা মাটির সাথে মিশ্রিত হয়ে আছে । মাস্কটি এতো ঘন যে আমি যদি টাবকে উল্টে ধরে রাখি তবুও এটি বিন্দুমাত্র এদিক সেদিক হয়না।টেক্সচার ঘন হওয়া সত্ত্বেও, এতটা মসৃণ এবং নরম যে খুব সহজে পুরো মুখে লাগানো যায়।অন্যান্য মাস্কের মতো আঙ্গুল/ব্রাশ দিয়ে টানাটানি বা ঘষাঘসি করতে হয়না।এই দিকটি আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে । পণ্যটির সমস্ত তথ্য কোরিয়ান এবং ইংরেজি উভয় ভাষায় টিউবের গায়ে লেখা আছে। অতএব, এই মাস্ক সম্পর্কে তথ্য/ব্যবহার জানতে কোন অসুবিধা হবেনা।
আমি যেভাবে ব্যবহার করি :
প্রথমে, আমি ফেইস ওআশ দিয়ে পুরো মুখ ভালভাবে পরিষ্কার করে নেই। তারপর অল্প একটু মাস্ক নিয়ে আঙ্গুলের সাহায্যে পুরো মুখে সমান ভাবে ছড়িয়ে দেই।এই অবস্থায় ২০ মিনিট অপেক্ষা করি তারপর উষ্ণ/হালকা গরম পানি দিয়ে ভাল করে পরিষ্কার করে নেই। প্রথমের দিকে আমি স্বাভাবিক পানি দিয়ে এটি ধুয়ে ফেলার চেষ্টা করি, তখন এটি খুব পিচ্ছিল হয়ে যায় এবং পরিস্কার করতেও অনেক সময় লাগে। পরের বার ব্যবহারের পর যখন উষ্ণ পানি ব্যবহার করি তখন খেয়াল করি যে, খুব সহজেই এটি পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে । তাই, আমি উষ্ণ পানি দিয়ে এটি ধুয়ে ফেলার পরামর্শ দেব এবং এর ব্যবহারবিধিতেও সেটাই উল্লেখ করা আছে।এই মাস্কটির যে দিকটি পছন্দ হয়েছে তা হল, মুখে দিয়ে ২০ মিনিট রাখার পরও কোন টানটান বা অস্বস্তি লাগেনা যেমনটা অনেক মাটির মাস্কএর ক্ষেত্রে ঘটে। মুখে দিয়ে আপনি কথা বলা বা যেকোনো কাজ নির্বিঘ্নে করতে পারবেন। আমি এই মাস্কটি সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করি।
আমার ফলাফল ও মতামত –
– ত্বক পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল করে তোলে।
– ত্বক নরম এবং মসৃণ হয় যা কিনা ব্যবহারের পরপরই আপনি লক্ষ্য করবেন।
– বেঁড়ে যাওয়া লোমকূপের ছিদ্রগুলোকে বেশ সঙ্কুচিত করে ফেলে যা খেয়াল করার মত।
– নাকের দুই পাশের হোয়াইটহেডস গুলো খুব ভাল ভাবে পরিষ্কার করে যার ফলে বন্ধ লোমকূপের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে এবং ব্ল্যাকহেডস হতে পারে না।
– ত্বককে এক্সফলিয়েটস করে।
– অত্যধিক তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ ও ত্বককে রিফ্রেশ রাখে।
– প্যাকেজিং টা ভ্রমণ বান্ধব ।
– মাস্কটি পরিমানে অনেক থাকে। আমি ৩ মাস যাবত ব্যবহার করছি, অর্ধেকও শেষ হয়নি ।
– বিশেষ করে আমার মতো তৈলাক্ত ত্বক ও বেঁড়ে যাওয়া লোমকূপের সমস্যা যাদের, তাদেরকে এটি ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি ।
লিখেছেন
আফরোজা আক্তার, সিলেট