সেনসেটিভ ত্বক?
রূপসচেতন মেয়েদের জন্য বর্তমানে সেনসেটিভ ত্বক একটি বিশাল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে আছেন যারা ত্বকের একেবারেই যত্ন নেন না এবং অনেক রাফ বা ক্ষতিকারক প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন, এর ফলে ত্বকে সাময়িক সমস্যা হয়। কিন্তু তারা মনে করে থাকেন যে ,তাদের ত্বক সেনসেটিভ। যারা ত্বক পরিষ্কার না করে ত্বককে সেনসেটিভ মনে করে থাকেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল । কারণ ত্বক যত্ন বা সঠিকভাবে পরিষ্কার না করলে ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা হবেই।
***সেনসেটিভ ত্বক কি?
সেনসেটিভ ত্বককে সংজ্ঞায়িত করা অনেক কঠিন। ডার্মাটোলজিস্ট ,সায়েন্টিস্ট ও যারা এই ত্বকের ভুক্তভোগী তাদের ,সবার ই দৃষ্টিভঙ্গী ভিন্ন ভিন্ন এই সেনসেটিভ ত্বকের প্রতি। তবে সাধারণ কথায় বলা যায় , সেনসেটিভ ত্বক হচ্ছে তাই যা খুব সহজে ইরেটেট বা উত্তেজিত হয় এবং যা ত্বকে হালকা থেকে খুব গভীর আকার ধারণ করে এবং ত্বকে বিভিন্ন এলার্জী বা রেশ জন্ম দেয় ।
***সেনসেটিভ ত্বকের উপসর্গ কি বা কি দেখে বুঝা যাবে যে ত্বক সেনসেটিভ ?
সেনসেটিভ ত্বকের উপসর্গ একেকজনের জন্য একেকরকম। তারপরও কিছু কমন উপসর্গ হলো :
১. যদি অনেক ধরণের কসমেটিক এ ত্বক খুব সেনসেটিভ থাকে , বিশেষ করে যেগুলো খুব সুগন্ধিযুক্ত সেগুলোতে এলার্জী থাকে।
২. সূর্যের আলোতে , বাতাসে গেলে বা তাপমাত্রার তারতম্য হলে বা খুব চাপে থাকলে যদি ত্বকে রেশ বা লাল লাল গোটা ওঠে।
৩. ত্বকের যত্ন নেওয়ার সময় যদি কোন উপকরণ রেশ বা এলার্জি করে ।
৪. ত্বকের নীচে যদি ভেঙ্গে যাওয়া রক্তনালী দেখা যায় ।
৫. ত্বকের গঠনটি যদি খুব পাতলা হয় এবং
৬. মুখের পোরগুলো পাতলা হলে।
উপরের এইগুলো থাকলে বুঝবেন যে ,আপনার ত্বক সেনসেটিভ ।
***সেনসেটিভ ত্বকে যা করা উচিত্ :
১. লেবু ও পানি দিয়ে তৈরী শরবত খাবেন ।
২. সানস্ক্রীন অবশ্যই ব্যবহার করবেন কারণ সূর্যের আলো আপনার শত্রু। তরে নন কমেডোজেনিক এসপিএফ প্যারাবেন ও ফ্রাগ্রেন্স ফ্রী সানস্ক্রীন ব্যবহার করুন। নামী দামী ব্রান্ডগুলো সেনসেটিভ ত্বকের জন্য বিভিন্ন সানস্ক্রীন তৈরি করে থাকে। আপনি আপনার পছন্দমত ও ত্বকে মানিয়ে যায় এমন একটি কিনে নিবেন।
৩. আপনার ত্বকে সহনশীল প্রোডাক্টটি চয়েস করুন। এজন্য বিভিন্ন প্রোডাক্ট ব্যবহার করে দেখুন কোনটি মানায়। সুগন্ধী সেনসেটিভ ত্বকের জন্য একটি খারাপ জিনিস। এটি এলার্জী করে। তাই বেশি সুগন্ধীযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেননা। আর যেই প্রোডাক্টই চয়েস করুন না কেন তাতে যেন , এন্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টি ইমফ্লামেটরী উপাদান থাকে।
৪. এন্টি ইমফ্লামেটরী গুণসমৃদ্ধ খাবার যেমন – হলুদ, আদা, দারুচিনি খাবেন তরকারীতে। কারণ এগুলো ত্বকের প্রদাহ হতে দেয় না এবং বলিরেখা ও দাগ না পড়তে সাহায্য করে।
***সেনসেটিভ ত্বকে যা কখনোই করবেন না :
১.অতিরিক্ত স্ক্রাব দিয়ে মুখ ঘষবেন না। প্রতি ৮ থেকে ১৪ দিনে একবার স্ক্যাব করবেন ।
২.গরম পানি দিয়ে মুখ ধোবেন না।
৩.পেট্রোলিয়াম সমৃদ্ধ কোন প্রোডাক্ট ত্বকে ব্যবহার করবেন না। কারণ এটি ত্বকে প্রলেপ তৈরী করে এবং মুখের ক্ষত সারাতে দেয়না ও পুষ্টি পায়না ত্বক।
৪. একি সময়ে অনেক ধরণের প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন না বা প্রাকৃতিক কোন উপাদান ইচ্ছেমত লাগাবেন না।
**মনে রাখুন :
যদি নতুন কোন প্রোডাক্ট বা প্যাক ত্বকে লাগাতে চান তাহলে প্রথমে সেই প্রোডাক্টটি বা প্যাকটি আগে কানের পেছনে একটু লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলবেন। এরপর পর্যবেক্ষণ করুন। ২৪ ঘন্টায় যদি ওই জায়গায় রেশ , এলার্জি বা লালচে হয়ে যায় তাহলে তা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।